চট্টগ্রামের সিআরবি শিরিষ তলা মাঠে বৃক্ষমেলা শুরু

পেঁপে

জমি তৈরি:

  • পেঁপে গাছ মোটেও জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না। তাই পেঁপের জন্য নির্বাচিত জমি হতে হবে জলাবদ্ধতা মুক্ত এবং সেচ সুবিধাযুক্ত।
  • জমি বারবার চাষ ও মই দিয়ে উত্তমরূপে তৈরী করতে হবে।
  • দ্রুত পানি নিকাশের সুবিধার্থে বেড পদ্ধতি অবলম্বন করা উত্তম।

গাছের পরিচর্যা:

  • চারা রোপণের আগে গর্তের মাটি ভালভাবে উলটপালট করে নিতে হবে।
  • প্রতি গর্তে ৩০সে.মি. দূরত্বে ত্রিভূজ আকারে ৩টি করে চারা রোপণ করতে হবে।
  • বীজ তলায় উৎপাদিত চারার উন্মুক্ত পাতা গুলি রোপণের আগে ফেলে দিলে রোপণ করা চারার মৃত্যু হার হ্রাস পায় এবং চারা দ্রুত প্রতিষ্ঠিত হয়।
  • পলিব্যাগে উৎপাদিত চারার ক্ষেত্রে পলিব্যাগটি খুব সাবধানে অপসারণ করতে হবে, যাতে মাটির বলটি ভেঙ্গে না যায়।
  • পড়ন্ত বিকেল চারা রোপণের জন্য উত্তম সময়। রোপণের সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে চারার গোড়া বীজতলা বা পলিব্যাগে মাটির যতটা গভীরে ছিল তার চেয়ে গভীরে না যায়
  • পেঁপের অধিকাংশ জাতের ক্ষেত্রে একটি পত্রক থেকে একাধিক ফুল আসে এবং ফল ধরে। ফল কিছুটা বড় হওয়ার পর প্রতি পত্রকক্ষে সবচেয়ে ভাল ফলটি রেখে বাকিগুলো ছিড়ে ফেলতে হবে।

সার প্রয়োগ:

  • ভাল ফলন পেতে হলে পেঁপেতে সময় মতো সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ করতে হবে। প্রতি গাছে ৪৫০ থেকে ৫০০ গ্রাম ইউরিয়া এবং ৪৫০ থেকে ৫০০ গ্রাম এমওপি সার উপরি প্রয়োগ করতে হবে।
  • চারা রোপণের এক মাস পর হতে প্রতিমাসে গাছ প্রতি ৫০ গ্রাম ইউরিয়া ও ৫০ গ্রাম এমওপি সার প্রয়োগ করতে হবে।
  • গাছে ফুল আসার পর এই মাত্রা দ্বিগুণ করতে হবে।

কীটনাশক

ঢলেপড়া ও কাণ্ডপচা রোগ: মাটি স্যাঁতস্যাঁতে থাকলে বীজতলায় চারায় ঢলে পড়া রোগ দেখা দিতে পারে। এছাড়া বর্ষাকালে কাণ্ডপচা রোগ দেখা দিতে পারে। কাণ্ডপচা রোগ হলে গাছের গোড়ায় বাদামী বর্ণের পানি ভেজা দাগের সৃষ্টি হয়। আক্রান্ত চারা গাছ মারা যায় এবং ঢলে পড়ে। প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা হিসেবে বীজতলার মাটি বীজ বোনার আগে শুকনা রাখতে হবে এবং সিকিউর নামক ছত্রাক নাশক ২ থেকে ৩ গ্রাম প্রতি কেজি বীজের সাথে মিশিয়ে শোধন করতে হবে। এ রোগের প্রতিকার হিসেবে রোগাক্রান্ত চারা গাছ উঠিয়ে পুড়ে ফেলতে হবে। এ ছাড়া প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম রিডোমিল এম জেড-৭২ ছত্রাকনাশক মিশিয়ে আক্রান্ত কাণ্ডে ছিটিয়ে দিলে সুফল পাওয়া যায়।
এ্যানথ্রাকনোজ: এ রোগের কারণে ফলের গায়ে বাদামী পচন রোগ দেখা দেয়। ফল খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে যায়।

প্রতিকার:

২ গ্রাম নোইন বা ব্যাভিস্টিন নামক ছত্রাকনাশক প্রতি লিটার পানির সাথে মিশিয়ে ১০ থেকে ১৫ দিন পর পর ২ থেকে ৩বার ফলে গায়ে স্প্রে করতে হবে।

পেঁপের মোজাইক:

এটি একটি ভাইরাস জনিত রোগ। এ রোগ হলে পাতায় হলুদ রং এর ছোপ ছোপ দাগ পড়ে, পাতার বোঁটা বেঁকে যায় এবং গাছের বৃদ্ধি কমে যায়। জাব পোকার আক্রমণে এ রোগ ছড়ায়। প্রতিকার: আক্রান্ত গাছ তুলে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। রোগ বিস্তারকারী পোকা দমনের মাধ্যমে এই রোগের বিস্তার রোধ করা সম্ভব।

মিলিবাগ:

সাম্প্রতিক সময়ে মিলিবাগ পেঁপের একটি তিকর পোকা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। আক্রান্ত পাতা ও ফলে সাদা পাউডারের মতো আবরণ দেখা যায়। আক্রান্ত গাছের পাতা ও ফল শুটি মোল্ড রোগের সৃষ্টি হয়। আক্রমণের মাত্রা বেশি হলে গাছ মারা যেতে পারে। প্রতিকার: আক্রমণের প্রথম দিকে পোকাসহ আক্রান্ত পাতা বা কাণ্ড সংগ্রহ করে ধ্বংস করে ফেলতে হবে। আক্রমণ বেশি হলে প্রতি লিটার পানিতে ৫ গ্রাম সাবান পানি অথবা এডমায়ার ২০০ এসএল ০.২৫ মি.লি. হারে মিশিয়ে ১৫ দিন পর পর ২ থেকে ৩ বার স্প্রে করতে হবে।