ধুন্দল
জমি নির্বাচন এবং জমি তৈরি:
- ধুন্দুল চাষাবাদের জন্য উত্তম উর্বর এটেল দো-আঁশ মাটি।
- চাষে জমির প্রথম শর্ত হচ্ছে উঁচু, পানি জমে থাকে না, গাছের কোনো ছায়া থাকে না এমন জমি নির্বাচন করতে হবে।
- দোঁয়াশ, বেলে দোঁয়াশ মাটি পাওয়া না গেলে এটেল মাটির সাথে দ্বি-গুন হারে গোবর বা কম্পোস সার ও লাল বালি মিশিয়ে ধুন্দল চাষ করা যায় ।
- গোবর মেশানো ভিটে মাটি সংগ্রহ করে তা গাছ রোপণের কাজে ব্যবহার করা ভাল।
- প্রথম অংশে তৃতীয় গ্রেডের ইটের কম দামি ছোট আকারের খোয়া/টুকরা দিয়ে ৩-৪ ইঞ্চি ভরাট করা
- তার ওপরের স্তরে ২-৩ ইঞ্চি পুরু করে কাঠ কয়লা দিয়ে দ্বিতীয় স্তর ভরাট করা; এবং ৩য় স্তর ২-৩ ইঞ্চি পুরু করে নারিকেলের ছোবড়ার টুকরা অথবা নারিকেলের ছোবড়া দিয়ে সাজানো
- ৪র্থ স্তর ২-৩ ইঞ্চি পুরু মোটা বালু (সিলেট স্যান্ড) বা ক্ষুদ্র পাথর কুচি/ইটের চিপস দিয়ে ভরাট করা
- শেষের বা ওপরের অংশ ২-২.৫ ফুট ভালো মানের পটিং মিডিয়া দিয়ে ভরাট করা
জাত: স্থানীয় জাতের ছাড়া ধুন্দল উফসী জাতের বারী-১ ও বারী-২ বেশ ভালো। এছাড়াও সুপ্রিম সীড, লালতীর, গেটকো, এসিআই, ইয়ং-এর হাইব্রিড বীজ গুলো বেশ ভালো।
গাছের পরিচর্যা:
- গাছে কাঠি বা খুঁটি দিয়ে সোজা করে রাখতে হবে।
- তাতে গাছ হেলে পড়া বা নড়ে গিয়ে দুর্বল হওয়া রোধ হবে।
- প্রয়োজনে গাছের অপ্রয়োজনীয় কিছু ডাল বিশেষ করে ওপরের দিকে বেশি বাড়ন্ত ডাল কমিয়ে গাছকে বেশি উঁচু না করে পাশে বাড়তে সহায়তা দিতে হবে।
- টবে সংরক্ষিত গাছ সরাসরি ছাদে না রেখে নিচে এক সারি ইটের ওপর বসানো দরকার। তাতে টবের অতিরিক্ত পানি সহজে বের হবে, ছাদের জন্য ভালো হবে।
- ড্রামে সংরক্ষিত গাছে রোদের তাপে বেশি গরম হয়। এজন্য চট/ছালা দিয়ে ড্রামের চারধার ঢেকে দিলে তা অনেকটা রোধ হবে।
- গাছে পানি সেচ দেয়ার ফলে উপরিভাগের মাটি শক্ত হয়ে চট ধরে। মাঝে মাঝে নিড়ানি দিয়ে ওপরের স্তর ভেঙে দেয়া হলে তা রোধ হবে। এ ব্যবস্থায় আগাছা দমন করা যাবে ও ভেতরে বায়ু চলাচল
সার প্রয়োগ:
- মিশ্র সার, হাড়ের গুড়া মাঝে মাঝে এবং অনুখাদ্য (দস্তা, বোরন, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ) বছরে একবার প্রয়োগ করা ভালো।
- মাছের কাঁটা, হাড়ের টুকরা,
- ডিমের খোসা,
- তরিতরকারির পরিত্যক্ত অংশ, পাতা, একটা ড্রামে পঁচিয়ে নিয়ে ছাদ বাগানে ব্যবহার করা ভালো।
রোগ-বালাইঃ
- পাতা কোকড়ানো
- চারাগাছে কাটুই পোকা
- ফল ছিদ্রকারী পোকা
- গোড়া পচা রোগ
জৈব কীটনাশক
- অতি ঝাল ২-৩ গ্রাম মরিচের গুড়া এক লিটার পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন ছেঁকে নিয়ে তাতে ২ গ্রাম ডিটারজেন্ট পাউডার ও এক চা চামচ পিয়াজের রস একত্রে মিশিয়ে ৮-১০ দিনের ব্যবধানে স্প্রে
- মাছি পোকায় আক্রান্ত ফল সংগ্রহ করে তা নষ্ট করে ফেলতে হবে।
- পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ।
- সেক্স ফেরোমন ফাঁদের ব্যবহার
- মাছির আক্রমণ থেকে ফসল রৰা করার জন্য বিষটোপ অত্যন্ত কার্যকর।
***ফলন বাড়ানোর জন্য ধুন্দুলের প্রথমে বের হওয়া শাখাটি থেকে কোন ফলন হয় না । নতুন নতুন শাখা প্রশাখা থেকেই ফলন হয় । সেই জন্য শাখাগুলোকে প্রথম ভেঙ্গে দেওয়াকে ওয়ান জি, ভাঙ্গা অংশে ভেড়ে উঠা শাখা গুলোকে দ্বিতীয়বার ভেঙ্গে দেওয়াকে টু জি, এই ভাবে থ্রি জি পর্যন্ত করলে আসা করি ভালো ফলন পাওয়া যাবে।